শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেশের ৩৩ শতাংশ গর্ভধারণ অপরিকল্পিত: আইপিপিএফ

ভোরের সংলাপ ডট কম :
জুন ৮, ২০১৭
news-image

ডেস্ক রিপোর্ট: দেশের প্রায় ৩৩ শতাংশ গর্ভধারণ অপরিকল্পিত। নিরাপদ মাতৃত্ব নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক এনজিও ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড পেরেন্টহুড ফেডারেশনের (আইপিপিএফ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪০ লাখ নারী গর্ভধারণ করেন। তাদের মধ্যে ১৩ লাখই থাকেন অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ। ফলে মা ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেলেও অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভপাত সমস্যা কমছে না।

পরিবার-পরিকল্পনা সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার না জানা, পদ্ধতির স্বল্পতাই অপরিকল্পিত গর্ভধারণের মূল কারণ বলে উল্ল্যেখ করেছেন আন্তর্জাতিক এনজিওটি। ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভধারণের কারণে অনেকে গর্ভপাত ঘটান। অধিকাংশ সময় সেই গর্ভপাত হয় অনিরাপদ। এতে বন্ধ্যাত্বের শিকার হওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হন নারীরা।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মোঃ নূর হোসেন তালুকদার বলেন, গর্ভকালীন সেবা গ্রহণের হার ২০১১ সালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ শতাংশ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানিক ও দক্ষ সেবাদানকর্মী দ্বারা প্রসবের হার বেড়ে প্রায় ৩৭ শতাংশ হয়েছে। শিশু মৃত্যু হ্রাসেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে।

বর্তমান তরুণ-তরুণীরা গোপন মিলনে জড়িয়ে পড়ছে এবং এতে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের ঘটনাও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে, বাংলাদেশে ১৪ শতাংশ মাতৃমৃত্যুর কারণ অনিরাপদ গর্ভপাত। অপরিকল্পিত এই গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের পুরো ঝুঁকি পোহাতে হয় নারীকে। আর দেশে প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের হারও সন্তোষজনক নয়।

রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং এ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রামের (আরএইচস্টেপ) নির্বাহী পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা বলেন, দেশে বহুবিবাহের প্রবণতা বেশি। এছাড়া অনৈতিক সম্পর্ক করারও ঝুঁকি আছে। তাই একজন পুরুষ জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করলে অনেক ক্ষেত্রে একাধিক নারী অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণের হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন।

বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অব সেপটিক এবরশনের পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, অনাকাঙ্খিত সন্তান না রাখতে চাইলে তার পথও খোলা আছে। নারীর শেষ মাসিকের প্রথম দিন হিসাবে ৬ থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে এমআর বা মাসিক নিয়মিত করার পদ্ধতি (যে কোনো কারণে মাসিক বন্ধ থাকলে তা নিয়মিত করে দেওয়া) বৈধ।

প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ রোধ করার আহবান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, গত দশ বছরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর হার বৃদ্ধি হলেও স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতিতে তেমন কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। অথচ স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ ছোট পরিবার গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত।
সূত্র: প্রিয়.কম

bhorersanglap