সোমবার, ২২শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্পেনের ক্যানারি দ্বীপে দাবানল, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

ভোরের সংলাপ ডট কম :
জুলাই ১৬, ২০২৩
news-image

স্পেনের ক্যানারি আইল্যান্ডসের লা’পালমায় দাবানলে কয়েক হাজার একর জমি ও বহু মানুষের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে জরুরি অগ্নির্নিবাপনকর্মীরা কাজ করছেন। হাজার হাজার বাসিন্দাকে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার ভোরে লাগা আগুনে অন্তত ১১ হাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও অন্তত এক ডজন বাড়ি পুড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সংস্থার অন্তত ৪০০ সদস্য মাঠে রয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, এর মধ্যে ৪ হাজার ২২৫ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, বাকিরা বাড়ি ছাড়তে রাজি হচ্ছে না। দুই বছরও হয়নি, এই দ্বীপে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত হয়েছিল। তখন হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।

ক্যানারি আইল্যান্ডসের আঞ্চলিক সরকারের প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো ক্লাভিজো বলেছেন, ‘বাসিন্দাদের সরাতে গেলে অনেকেই বাড়ি ছাড়তে রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার জীবন বাঁচানো, তারপর ঘরবাড়ি এবং সব শেষে আগুন নেভানো।’পুনতাগোর্দার উত্তর–পশ্চিমের পৌর শহর এল পিনার এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর তা দক্ষিণের তিজারাফ শহরে ছড়িয়ে পড়ে।বাতাস, জলবায়ু পরিস্থিতি ও ইউরোপে চলমান দাবদাহকে এই দাবানলের দ্রুত বিস্তারের কারণ হিসেবে দেখছেন ক্লাভিজো।

শনিবারের দিনের পরের ভাগে দাবানলের গতি ধীর হলেও এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল তিনি জানান। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আগুন নেভাতে রাত নামার আগে সিপ্লেন (জলে ও স্থলে ওঠানামায় সক্ষম ছোট উড়োজাহাজ) ব্যবহার করে পানি ছিটানো হয়। আরেকটি সিপ্লেন রোববার আগুন নেভাতে যোগ দেবে।

স্প্যানিশ সেনাবাহিনীর ১৫০ জন অগ্নীনির্বাপনকর্মী ঘটনাস্থলে মোতায়ন রয়েছে। আরও একটি ইউনিট যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।স্প্যানের প্রধানমন্ত্রী এক টুইটে বলেন, তিনি স্থানীয় কর্মকর্তা ক্লাভিজের সঙ্গে কথা বলে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। আগুন নেভাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে বলেছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা লিওন ব্যারেটো বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি বলে বিবিসিকে জানান। তিনি বলেন, সিভিল গার্ড এসে বাসিন্দাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে।‘সারাজীবন কাজ করে আপনি যা কিছু অর্জন করেছেন, তার সব কিছুই তারা আপনাকে ছেড়ে চলে যেতে বলছে। এগুলো পুড়ে গেলেও সমস্যা নেই, কারণ এটি প্রোটোকল। তারা আপনাকে প্রটোকল মানতে বাধ্য করতে চায়, কিন্তু আসলে যেভাবে তাদের কাজ করা উচিত, সেভাবে কাজ করার প্রটোকল তাদের নেই।’

এই দাবানল এমন এক সময়ে লাগল, যখন দক্ষিণ ইউরোপের দাবদাহ চলছে এবং তাপমাত্রা ব্যাপক বেড়েছে। এই পরিস্থিতি আগামী সপ্তাহেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।সাধারণ আবহাওয়ার মধ্যে তীব্র গরম থাকে। কিন্তু বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এখন ঘন ঘন দাবদাহ হচ্ছে। সেগুলো যেমন তীব্র, তেমনি দীর্ঘস্থায়ীও হচ্ছে।

bhorersanglap