বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘ক্ষণিকের কালো মেঘ কেটে যাবে’

ভোরের সংলাপ ডট কম :
আগস্ট ১৪, ২০১৭
news-image

আমরা দুঃসময়ে পতিত হয়েছি’-ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর এই বক্তব্য দিলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এখন বলছেন শঙ্কার কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে উদ্বেগ থাকতে পারে, কিন্তু শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই, (কারণ) আমি দেখি নাই। এ ক্ষণিকের মেঘ কেটে যাবে।’

সোমবার বিকালে রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাদের এ কথা বলেন।

গত ১১ আগস্ট রাজধানীতে এক আলোচনায় ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আবার আমরা দুঃসময়ে পতিত হয়েছি। চক্রান্তের মুখে পড়েছি। ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শেখ হাসিনার অর্জনকে পণ্ড করার জন্য।’

তবে তিন দিনের ব্যবধানে পুরোপুরি উল্টো কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘রায়ের পর্যবেক্ষণ নিয়ে আমি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করেছি, আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে। প্রধান বিচারপতিকে আমাদের দলের অবস্থান জানিয়েছি। আমি আজ আবার প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতিকেও সেই পর্যবেক্ষণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে যে বক্তব্য জানিয়েছি, সেটা রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেছি। এই নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।’

এ সময় কাদের বলেন, ‘আকাশের মেঘ ক্ষণিকের, সুর্য চিরদিনের। ক্ষণিকের মেঘ কাটিয়া যাবে, চির দিবসের সূর্য উঠিবে আবার।’

চিস্তা চুক্তি সময়ের ব্যাপার বলেও জানান কাদের। বলেন, ‘সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন এবং ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। এর চেয়ে তিস্তার পানি বন্টন খুব বেশি সমস্যা নয়। আলাপ আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। তিস্তা নিয়ে আমাদের যে প্রাণের দাবি সমাধান ও চুক্তি সম্পাদন হবে। এই আশ্বাস আমি দিতে পারি। অচিরেই তিস্তা নদীর পানির বন্টনের চুক্তি সম্পাদন হবে।’

তিস্তা চুক্তি করতে একজন বাঙালি হিসাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যয়ের প্রতি অনুরোধ জানান কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মাঝখানে কিছু সময় প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে টানাপড়েন হয়েছে। সম্পর্কে একটা মহল অবিশ্বাস ও সন্দেহের দেয়াল তুলেছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতায় আসার পর, বিশেষ করে বর্তমান ডাইনামিক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসার পরে, সেই সন্দেহ ও অবিশ্বাসের দেয়াল আমরা ভেঙে ফেলেছি।’

‘আর কোন অবিশ্বাস নয়। অবিশ্বাস ও সন্দেহের বাতাবরণে দুই প্রতিবেশির সহাবস্থান শান্তিপূর্ণ হয়নি। তাই আজকে সংশয়-সন্দেহের অবসান ঘটিয়েছি বলেই চুয়াত্তর সালের ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির বাস্তবায়ন আমরা করতে পেরেছি।’

‘মাথা উঁচু করে চলবেন’

মাথা উঁচু করে চলতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক এই বাংলাদেশে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা নিজেদেরকে সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন মনে করবেন না। আপনারা এদেশের ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন। এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের যে অধিকার, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবারই একই অধিকার।’

‘আপনারা নিজেদের মাইনরটি ভাবেন কেন? মাথা উচু করে চলবেন। কার কাছে মাথানত করবেন। আপনার সমান অধিকার। আপনারা নিজেদের মাইনরিটি ভাবলে কিছু দুর্বৃত্ত আপনাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। এ দুর্বৃত্তদের রুখে দাঁড়াতে শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের সঙ্গে আছে।’

কাউকে ভয়ে দেশ না ছেড়ে চলে যাওয়া আহ্বানও জানান আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘নীরবে চলে যাবেন না। কথা বলুন। কারা আপনাদের জমি-জমা, বাড়িঘর নিয়ে ঝামেলা করছে? এসব দুর্বৃত্তদের মোকাবেলায় এগিয়ে আসুন। ভয় করবেন না। ভয় করার কোন কারণ নেই। শেখ হাসিনা সরকার আপনাদের নিরাপত্তায় আছেন এবং থাকবেন।’

ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূর্জা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডি এল চ্যাটার্জীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামন মিয়া প্রমুখ।

bhorersanglap

আরও পড়তে পারেন