শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

একজন ‘একক মা’য়ের সফলতার গল্প

ভোরের সংলাপ ডট কম :
মে ১৫, ২০১৭
news-image

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সিঙ্গেল মাদার বা একক মায়েদের সন্তানকে বড় করে তোলার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। তারপরও অনেক মা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এককভাবে তাদের সন্তানকে বড় করে তুলছেন।

 

 
বিশ্বের অনেক দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’ পালন করা হয়। বাংলাদেশেও বিশেষ করে শহরাঞ্চলে গত বেশ কয়েক বছর যাবৎ ‘মা দিবস’ পালন করা হয়।
এমনই একজন মা ড্যানি রহমান। একটি অটিস্টিক শিশু জন্মদানের পর যার সংসার ভেঙ্গে গিয়েছিল। বাবা তার সন্তানকে ছেড়ে গেলেও, মা হিসেবে তিনি এককভাবেই ছেলেকে বড় করে তুলেছেন। গড়ে তুলেছেন স্নায়বিক অটিস্টিকদের জন্য কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

 

 

 
একক মা হিসেবে প্রতিকূলতা সম্পর্কে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড্যানি রহমান বলেন, ‘একক মা একটি সন্তানের পরিচয় হতে পারে, সেই সামাজিকতায় বাংলাদেশ পৌঁছায়নি। সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা একেবারেই কম। সম্প্রতি হয়তো এ কথাটা সামনে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও লক্ষণীয়। অনেক নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী না বা শক্তিশালী অবস্থানে থাকে না। সমাজে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করার মতো মানসিকতায় এখনো নারী দাঁড়াতে পারেনি।’

 

 
সমাজের কাছ থেকে এককভাবে একজন মা কতোটুকু সহযোগীতা পান?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সামাজিক ও পারিবারিকভাবে একা মা হিসেবে সামনে এগিয়ে চলার মানসিকতা এখনো তৈরি হয়নি। আমাদের সমাজে নারী মানেই হয় বাবা, নইলে ভাই অথবা স্বামীর অধীনে থাকবে।’
ড্যানি রহমানের ছেলের বয়স যখন ছয়-সাত বছর তখন তাঁর সংসার ভেঙে যায়। অটিস্টিক সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ড্যানি রহমানকে অনেক চাপের মুখে পড়তে হয়। একজন নারী হিসেবে ড্যানি রহমানের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুস্থ-সবল সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। সন্তান অটিস্টিক হবার কারণে তাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে অনেক চাপের মধ্যে পড়তে হয়েছে। প্রচুর শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট এবং যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে দিন পার করেছেন তিনি। লোকের মন্দ কথাও তাকে শুনতে হয়েছে। এমনকি অন্য লোকের কাছ থেক ড্যানি রহমানকে শুনতে হয়েছে, ‘তোমার কোন পাপের জন্য বাচ্চাটা এ রকম হয়েছে’।

 

 

 
তখন এক পর্যায়ে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, তিনি সন্তানের দিক বেছে নেবেন, নাকি সংসার?
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে তা নিয়ে আমি মানসিক তৈরি ছিলাম না। একক মা হতে গেলে সেখানে কী কী প্রতিবন্ধকতা আসবে, গ্রহণযোগ্যতা থাকবে কিÑনা সে বিষয়ে আমি কিছই জানতাম না। বেশ বাধা-বিপত্তি পার করেই নিজের সন্তানকে লালন-পালন করতে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত ড্যানি রহমানের ছেলে ‘এ লেভেল’ পাশ করেছেন এবং এখন কারিগরি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। বিবিসি বাংলা

bhorersanglap