রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দারিদ্র্য কমলেও দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে

ভোরের সংলাপ ডট কম :
মে ২৩, ২০১৭
news-image

সার্বিক বিবেচনায় দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। কিন্তু নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। ২০১০ সালে ৫৫৯টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও ২০১৫ সালে ৭৮৯টি ঘটনা ঘটে, যা আমাদের দারিদ্র্য বিমোচনের সফলতাকে ম্লান করছে। দক্ষিণ এশীয় দারিদ্র্যের অবস্থা বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়। সাউথ এশিয়া অ্যালায়েন্স ফর প্রভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি), ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) এবং বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) এর উদ্যোগে আয়োজিত এ পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর।

অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন অর্থনীবিদ ড. মাহফুজ কবীর। আলোচনায় অংশ নেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, বিএমএ’র সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দিন খান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মেদ খান, ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মুশতাক আলী, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, নারী নেত্রী প্রতিমা পাল মজুমদার, বিএনপিএস’র শাহনাজ সুমী, শরিফুজ্জামান শরিফ প্রমুখ।

ড. মাহফুজ কবীর বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাংলাদেশেও এ সহিংসতা বেড়েছে। অথচ দারিদ্র্যের সঙ্গে সহিংসতা কমার কথা ছিল। তিনি বলেন, “ধনীদের হাতে সম্পদ বাড়ছে। দৃশ্যমান বস্তির সংখ্যা কমলেও বস্তিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। যেখানে মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। সার্বিক ক্ষেত্রে অসমতা বাড়ছে। ”

অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “আমাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। ই-গভর্ণেন্স এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। সরকারকে সে বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ” তিনি বলেন, “প্রতিবেদনে আমাদের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শিক্ষকরাও সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না। শিক্ষার এ দূরাবস্থা থেকে কাটিয়ে উঠতে হবে। স্বাস্থ্যখাতের স্বচ্চতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ”

ড. তানজিমউদ্দিন খান বলেন, “এ প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংখ্যাগত উন্নয়ন বাড়লেও গুণগত উন্নয়ন বাড়ছে না। তাই উন্ননের ধারণা পরিবর্তন করতে হবে। ” তিনি বলেন, “ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন বাড়ছে। জনজীবনে সংকট বাড়ছে। ” এ অবস্থা পরিবর্তনে সুষম উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

রোকেয়া কবীর বলেন, “সরকার নারী নির্যাতন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিলেও প্রতিবেদনে তার প্রতিফলন নেই। তবে পোশাক খাতে সুফল পাওয়া গেছে। এই খাতে নির্যাতন ও হয়রানির সংখ্যা কমেছে। ” সহিংসতা কমাতে নারীর আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। বাপার আব্দুল মতিন বলেন, “বনের গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে। মন্ত্রী-এমপিরা সেখান থেকে মাসহারা নিচ্ছেন। কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে। পানিতে দূষণ বাড়ছে। সুপেয় সংকট দেখা দিচ্ছে। ফলে দারিদ্র কমলেও জনজীবনে সংকট বাড়ছে। “

bhorersanglap

আরও পড়তে পারেন