বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দেশে সহিংসতার শিকার ৮২ শতাংশ শিশু

ভোরের সংলাপ ডট কম :
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
news-image

সুরক্ষা না করে উন্নয়ন করলে উন্নয়ন সম্পূর্ণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, আমাদের দেশে উন্নয়ন আছে, কিন্তু শুধু উন্নয়ন থাকলেই হবে না। উন্নয়নের সাথে মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বাজেট পর্যালোচনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কাজী রিয়াজুল হক। ওয়ার্ল্ড ভিশনের আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাজেট পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এবং সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: আবু ইউসুফ। বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর পরিচালক চন্দন গোমেজ এবং সাবেরা সুলতানা প্রমুখ। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ সম্প্রতি শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে সরকারের বিগত তিন বছরের বাজেট পর্যালোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। অনুষ্ঠানে উক্ত বাজেট পর্যালোচনার উপর প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক আরো বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই কাজ করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা আছে। তারপরও সরকারের এখানে একটি জবাবদিহিতার দায়বদ্ধতা জায়গা আছে। এখনও শিশু বাড়িতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হয় এটা দুঃখজনক। শিশুরা শিশু সুলভ পরিবেশের মধ্যে যেন বড় হয় আমাদের সে বিষয় মনে রাখতে হবে। শিশুরাই আগামী দিন দেশ পরিচালনা করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ১ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের মধ্যে ৮২ শতাংশ বিভিন্ন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। ১৪ বছর বয়সের পূর্বে ৭৭ দশমিক ১ শতাংশ শিশু বিদ্যালয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। ৫৭ শতাংশ শিশু কর্মক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। পরিসংখ্যান ব্যুারোর প্রতিবেদন মতে ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ শিশু বাল্য বিয়ের শিকার হয়। ৮৮ শতাংশ শিশু পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়। তাদের মধ্যে ৪২ থেকে ৬৪ শতাংশ শিশু যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার। নির্যাতন বন্ধে অবশ্যই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে বাজেটে বরাদ্দ করতে হবে। তা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রণয়নকৃত শিশু বাজেট জাতীয় বাজেটের ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। যা জিডিপির ২ দশমিক ২ শতাংশ। ৮টি মন্ত্রণালয় দিয়ে শুরু হওয়া শিশু বাজেট এখন ১৩টি মন্ত্রণালয় যুক্ত করা হয়েছে। শিশু অধিকার রক্ষা একটি ক্রস কাটিং ইস্যু। তাই ভবিষ্যতে বাজেটের আকার আরো বড় হবে বলে মন্তব্য করেন তারা। তারা বলেন, ২০১৫ সালে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) চূড়ান্ত করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসডিজি এর অভীষ্ট ১৬ এর আওতায় শান্তি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করণে উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এজন্য বাজেটে বরাদ্দ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণের সুপারিশ করা হয়। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শিশুদের নেতৃত্বে ‘আমি’ই পারি’ শিশুর প্রতি শারীরিক সহিংসতা বন্ধ করতে- প্রচারাভিযান পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, সম্প্রতি তিন বছরের বাজেট পর্যালোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।

bhorersanglap