বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট: কৃষিতে ভর্তুকির টাকা ব্যয় হবে সার আমদানিতে

ভোরের সংলাপ ডট কম :
জুন ৮, ২০১৭
news-image

ডেস্ক রিপোর্ট: ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য মোট ১৩ হাজার ৬০৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে এক হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা এবং অনুন্নয় খাতে ১১ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর কৃষিতে ভর্তুকি রাখা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কৃষি খাতে দক্ষতা বাড়াতে কোনো উদ্যোগ নেই। শুধু বরাদ্দ আর ভর্তুকি বাড়ালেই চলবে না। কৃষি খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়লেও নারী কৃষকদের ব্যাপারে বাজেটে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই।’

গবেষণা খাতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হলেও বাজেটে এ খাতে নতুন করে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। নেত্রকোনার কলমাকান্দার বাউশামের কৃষক নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কৃষি গবেষণা খাতে বরাদ্দ নেই। এ দিকে কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে। আগামীতেও এটা নিম্নমুখী থাকতে পারে। বাজেটে আমদানিনির্ভর নীতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, আর বাজেটে যে ভর্তুকি রাখা হয়েছে তার প্রায় সবটাই চলে যাবে সারের ভর্তুকিতে।’

বাজেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য স্বাভাবিক ভর্তুকির অতিরিক্ত হিসেবে কৃষিজাত সামগ্রী রফতানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রাখা হয়েছে। কৃষি উপকরণ সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শূন্য শুল্কহার বহাল রাখা হয়েছে। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আমদানিকৃত চালের ওপর সর্বোচ্চ শুল্কহার অব্যাহত রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া গ্রিনহাউজ প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত কৃষি উপকরণের ওপর শুল্কহার কমানো হয়েছে। সেচযন্ত্রে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ হারে ছাড়ও অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে বাজেটে সেচ কাজে ডিজেল ব্যবহারের ওপর আলাদাভাবে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। আর আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বাড়লে কৃষি বাজেটের অন্যান্য বরাদ্দ কাটছাঁট করে সার আমদানি করতে হবে।

বাজেট বিশ্লেষণে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজেটে বরাদ্দ আর ভর্তুকি বাড়ালেই হবে না। কৃষি খাতে গবেষণা, কৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নারী কৃষকদের জন্য সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা না থাকলে কৃষকের কোনো উপকার হবে না। গ্যাসের অভাবে সার উৎপাদন কম হওয়ায় সার আমদানি করতেই ভর্তুকির পুরো টাকা ব্যয় হবে। ফলে ভর্তুকি বাড়ানো হলেও কৃষক এতে লাভবান হবেন না। কারণ কৃষক ভর্তুকির টাকা পাবেন না।

এ ব্যাপারে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তুকি বাড়লেই কৃষক লাভবান হবেন না। কারণ ভর্তুকির অর্থে বিদেশ থেকে সার আমদানি করা হয়। গ্যাসের অভাবে সার উৎপাদন কম হওয়ায় এখন সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে সার আমদানি করতে হচ্ছে। ভর্তুকির প্রায় পুরো টাকা সার আমদানিতেই যাবে বলে তার আশঙ্কা।
সূত্র: প্রিয়.কম

bhorersanglap