বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৪৬ বছরে ১৩৩৭২ কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছে: অর্থমন্ত্রী মুহিত

ভোরের সংলাপ ডট কম :
জুন ৮, ২০১৭
news-image

ডেস্ক রিপোর্ট: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৪৬ বছরে ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যা থেকে সরকার ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।’

৮ জুন বৃহস্পতিবার সকালে ১৬তম অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা থেকে ১৯ লাখ টাকা থেকে রাজস্ব আয় হয় ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৮১ লাখ টাকা। ১৯৮১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকার থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

এরপর ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সময়কালে ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকার থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকার থেকে রাজস্ব এসেছে ১৪১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ২০০১ হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৮২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার থেকে রাজস্ব এসেছে ১০২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

এ ছাড়া ২০০৭ হতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ৯ হাজার ৬৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার থেকে সরকার রাজস্ব পায় ৯১১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৮০৫ কোটি ১ লাখ টাকার সরকার রাজস্ব পান ২৩০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ২০১৩ থেকে অদ্যবধি ৮৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকার থেকে রাজস্ব পাওয়া গেছে ৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে আমানতকারীদের অর্থ আত্মসাতের খবর প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসলে বা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক পরিদর্শন দল প্রেরণ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যাংক সমূহকে কেস টু কেস ভিত্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া গ্রাহকদের এ ধরণের কোন জাল-জালিয়াতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে কিনা তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মিত পরিদর্শনেও খতিয়ে দেখা হয়।

সংসদে সরকারি দলের সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কৃষি ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংক এ ঋণ বিতরণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকসমূহের পাশাপাশি ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে সকল বেসরকারি বাণিজ্যিক ও বিদেশী ব্যাংকসমূহের জন্য কৃষি ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ৩৮টি বেসরকারি বাণিজ্যক ব্যাংকগুলো ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮ হাজার ৩৬০ কোটি ৪২ লাখ টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ হাজার ৫৮৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা কৃষি ঋণ ও পল্লী ঋণ বিতরণ করছে।

সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয়ে নগর বস্তিবাসীদের আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পে ৫ কোটি মার্কিন ডলার বিশ্বব্যাংকের ঋণ এবং বাকি ৭০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকার প্রদান করবে ।

মুহিত বলেন, দেশের নগরাঞ্চলের বস্তিবাসী এবং অস্থায়ী বাসিন্দাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা ও তাদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে বিশ্বব্যাংক ‘স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য উন্নত জীবন ব্যবস্থা’ শীর্ষক প্রকল্পে ৫ কোটি মার্কিন ডলার প্রদান করবে। এ লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশ সরকারের গত বছরের ৩০ জুন একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং সিরাজগঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ১৯টি কমিউনিটিতে বসবাসরত বস্তিবাসী এবং অস্থায়ী বাসিন্দাদের আবাসন, অন্যান্য অবকাঠামো এবং সেবাসমূহ উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

তিনি আর বলেন, বস্তিবাসীদের আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি ও পরিকল্পনা, জমির নিরাপত্তা, পরিবেশ উন্নয়ন এবং সামাজিক ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য খাতে সহায়তা প্রদান করা হবে। এর ফলে ওই সকল এলাকার বাসিন্দাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
সূত্র: প্রিয়.কম

bhorersanglap