বুধবার, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘বাজেটে অভিবাসীদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি’

ভোরের সংলাপ ডট কম :
মে ২৫, ২০১৭
news-image

বিনা খরচে বিদেশ গমন ও বিনা সুদে ঋণের দবি জানিয়ে আগামী বাজেটে অভিবাসী কর্মীদের জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ) আয়োজিত ‘অভিবাসীর বাজেট’ শীর্ষক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৪০০ অভিবাসী অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের অভিবাসন বিষয়ক সংসদীয় ককাস কমিটির সদস্য নূরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ।

এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে অভিবাসন ইস্যুতে কর্মরত সুশীল সমাজ প্রতিনিধি অধ্যাপক সি আর আবরার, সৈয়দ সাইফুল হক, আতিকুন নবী, হাসান ইমাম ও সুমাইয়া ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওকাপ চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম।

শাকিরুল ইসলাম বলেন, অভিবাসীদের ৯০ শতাংশ দালালের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছে। বিদেশ যাওয়ার জন্য সঠিক তথ্য না জানার জন্য এটা হচ্ছে। অথচ অভিবাসী কর্মীদের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচির জন্য কোনো বাজেট রাখা হয় না।

রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হলেও জাতীয় বাজেটে এ সেক্টরে বরাদ্দ মাত্র ০.১৭ শতাংশ, যা খুবই নগণবলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক অধ্যাপক সিআর আবরার বলেন, ১৭ শতাংশ বরাদ্দ খুবই নগণ্য। অভিবাসীদের সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দরকার। কর্মীদের কল্যাণ ফান্ড থেকে নানা কাজে অর্থ খরচ করা হচ্ছে, যার ফলে সরাসরি কর্মী লাভবান হচ্ছে না। তিনি বলেন, টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অভিবাসীদের জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে।

অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, সরকার নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মদক্ষতা ও সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। অভিবাসীদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে।

প্রধান অতিথি নূরজাহান বেগম বলেন, এসডিজি অর্জন করতে হলে অভিবাসন খাতকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। তবে অভিবাসন খরচ কমানোর জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।আগামী বাজেটে অভিবাসন খাতে বেশি বাজেট বরাদ্দের জন্য জাতীয় সংসদে দাবি উত্থাপনের আশ্বাস দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ওয়ারবি চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক বলেন, গার্মেন্টস খাতে সরকার ৫-১৫ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে থাকেন। অথচ অভিবাসী কর্মীদের ১০০ ডলার পাঠাতে ১০ ডলার খরচ করতে হয়।

উপস্থিত অভিবাসী কর্মীদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থেকে আগত বিদেশ ফেরত মো. শাহ জালাল জানান, ১৫ বছর সৌদি আরবে থাকার পর দেশে এসে গত চার বছর ধরে কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছি।তবে আজও সফল হইনি। তাই অভিবাসীদের জন্য বিনা সুদে ব্যাংকঋণের বন্দোবস্ত করতে জাতীয় বাজেটে অভিবাসীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির জোর দাবি জানান তিনি।

অপর এক অভিবাসী কর্মীর দাবি, দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে যারা ফিরেন, সরকার যেন তাদের পাশে দাঁড়ায়।

অভিবাসী কর্মী শহিদুল ইসলাম বলেন, অভিবাসীরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পেতে পারেন সেজন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে।

অভিবাসী নুরুল ইসলাম বলেন, সরকার যদি বিনা খরচে বিদেশে পাঠায় তাহলে অভিবাসী কর্মীদের জমি-জমা বিক্রি করতে হবে না।

অভিবাসী সুপ্রিয়া বলেন, প্রায় ২০-২৫ বছর বিদেশে থেকেও আমি এখন শূন্য। সরকার যদি আমাদের জন্য বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে, তাহলে কিছু করতে পারি।

bhorersanglap

আরও পড়তে পারেন