মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ফিক্সিংয়ের সন্দেহের তালিকায় বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ

ভোরের সংলাপ ডট কম :
আগস্ট ২৯, ২০১৮
news-image

ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের কলঙ্ক ম্যাচ ফিক্সিং। জুয়াড়িদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো ম্যাচের ফলাফল বা চিত্রনাট্য সাজানোর মতো কাজ প্রায়শই শোনা যায় ক্রিকেট অঙ্গনে। দক্ষিণ আফ্রিকার হানসি ক্রুনিয়ে, ভারতের আজহারউদ্দিন কিংবা পাকিস্তানের সালমান বাট, মোহাম্মদ আমিররাও জড়িয়েছেন ফিক্সিংয়ের কালো দুনিয়ায়।

এমনকি বাংলাদেশ দলের মোহাম্মদ আশরাফুলও ঘরোয়া ক্রিকেট বিপিএলে ম্যাচ পাতালেও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাথে এতদিন ছিল না ম্যাচ পাতানোর কোন দাগ। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে এই সুনাম আর বেশিদিন টিকবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ঘটনায় জড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দলেরও নাম।

তবে এই ঘটনায় মাশরাফি-সাকিবদের নাম খারাপ হওয়ার সুযোগ খুব অল্পই। কেননা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ম্যাচ ফিক্সিং সম্পর্কিত সবশেষ যে খবর তাতে মূল হোতার নামটা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল। এমনটাই জানাচ্ছে জনপ্রিয় টেলিভিশন আল জাজিরা, জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

চলতি বছরের শুরুতে ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং সম্পর্কিত একটি ডকুমেন্টারি প্রকাশ করেছিল আল জাজিরা। যেখানে দেখা গিয়েছিল ম্যাচ পাতানোর সাথে জড়িত আছে অনেক বড় বড় নাম। খুব শিগগিরই এই ডকুমেন্টারির দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ মাধ্যমের খবর এই যে ডকুমেন্টারির দ্বিতীয় পর্বে থাকবে অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়দের কুকীর্তির তথ্য।

তবে সেটি শুধুই ২০১১ সালে খেলা ম্যাচগুলোকে ঘিরেই। সে বছর অ্যাশেজ সিরিজ, ওয়ানডে বিশ্বকাপ, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফর এবং ঘরের মাঠে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। এসব সিরিজের উল্লেখযোগ্য ম্যাচে ফিক্সিংয়ের মতো গর্হিত কাজ করেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।

আল জাজিরার ডকুমেন্টারির দ্বিতীয় পর্বে যে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটকে আক্রমণ করা হবে সে ব্যাপারে ধারণা পেয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ডও। সংবাদ মাধ্যমে এ তথ্য নিজেই জানিয়েছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী।

সাদারল্যান্ড বলেন, ‘আল জাজিরার নতুন ডকুমেন্টারির ব্যাপারে আমরা ধারণা পেয়েছি। তাদের প্রথম ডকুমেন্টারির পর থেকেই আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিট এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু আল জাজিরার কাছ থেকে যথাযথ সহযোগিতা না পাওয়ায় বারবার কাজ থামাতে হয়েছে আইসিসিকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও আল জাজিরার ভিডিও ফুটেজের কোনোটাই আমরা পরীক্ষা করে দেখার অনুমতি পাবো না। তবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সম্পৃক্ততার অভিযোগ গুরুতর ভাবেই দেখা হবে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা এরই মধ্যে আল জাজিরার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্য সংগ্রহের কাজে নেমে পড়েছে। তবে আল জাজিরা আমাদের অল্প যা তথ্য দিয়েছে তাতে আমাদের দলের বর্তমান বা প্রাক্তন কোন খেলোয়াড়ের ফিক্সিংইয়ে জড়িত থাকার শক্ত প্রমাণ নেই। আমরা এই ব্যাপারটা আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি। তাদের কাজে পূর্ণ সহযোগিতা করবো আমরা।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের বিশ্বকাপের পরপরই বাংলাদেশ সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তারা জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানেই। তবু যেহেতু ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সন্দেহের তীর অস্ট্রেলিয়ার ২০১১ সালের ম্যাচগুলোর দিকে, তাই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই চলে আসছে বাংলাদেশেরও নাম।

bhorersanglap