শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডিসেম্বরে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

ভোরের সংলাপ ডট কম :
ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
news-image

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই মন্ত্রিত্ব থেকে অবসরে যাব। এক জায়গায় বেশি দিন থাকলে পচন আসে, যা অনেক সময় দেশের জন্য ভালো ফল বয়ে আনে না। এবার সত্যি আমি অবসরে যাব।’ তবে রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন কি না, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি।

শনিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামস-উল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক অনুষ্ঠানে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে শিক্ষাখাত এবং কেলেঙ্কারির কারণে ব্যাংকখাত ‘ধ্বংসের’ অভিযোগ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কঠোর সমালোচনা করেন বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

তবে এর আগে একাধিকবার অর্থমন্ত্রী তার বয়সের কারণে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা পোষণ করেন। তবে কেন তা হয়নি সে প্রশ্নেরও উত্তর তিনি দিয়েছেন। এমনকি আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবে না বলেও নিশ্চিত করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে দলের প্রয়োজনে সভানেত্রীর নির্দেশনা পেলে হয়ত নির্বাচনে অংশ নিতে হতে পারে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়েছেন আমরা দুজন (অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী) দেশটা নষ্ট করে ফেলছি। আমি আমার বন্ধু নুরুল ইসলাম নাহিদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আমার কথাই আমি বলব। বহু দিন এক জায়গায় থাকলে পচন আসে আমি এবার সত্যিকারভাবেই অবসরে যাব। বদরুদ্দোজা সাহেবদের হয়ত অবসরে যাওয়ার কোনো চিন্তা বা ব্যবস্থা নাই। তবে আমি আগামী ডিসেম্বরে এ পদ থেকে সরে দাঁড়াব।’

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘তিনি (বদরুদ্দোজা চৌধুরী) বলেছেন, হ্যাঁ, অর্থমন্ত্রী দেশে কিছু কাজটাজ করেছেন, কিন্তু অবসর যদি না নেন তাহলে নিরাপদ মন্ত্রণালয়ের কোথাও পাঠিয়ে দিতে। আমার প্রথমে মনে হয়েছিল, আজকে এখানে বক্তব্য করব রিটায়ারমেন্টের ওপরে। রিটায়ার কখন করা উচিত এবং রিটায়ারমেন্ট কীভাবে নেওয়া উচিত, সেই সম্বন্ধে আজকে বক্তব্যটি রাখব। তার আরো একটি বিশেষ কারণ হলো আমি এখন সত্যিকারভাবে জানি, আমি রিটায়ার করতে যাচ্ছি। এই বছরের ডিসেম্বরে রিটায়ারমেন্টে যাব।’

সমালোচনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনে হয় সে রকম রিটায়ারমেন্টের ধারণা নেই। না হলে তাকেই উপদেশ দিতে চেয়েছিলাম যে- কোনো একটা সময় আসে তখন রিটায়ার করাটাই আমাদের জন্য ভালো এবং রিটায়ারমেন্টে যেভাবে থাকা যায়, সেভাবেই আমাদের থাকা উচিত।’

ব্যাংক খাতের সেবার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে ব্যাংকিং সার্ভিস ততটা প্রসারিত হয়নি। আমাদের ব্যাংকের শাখা আরো বাড়ানো উচিত। কারণ ব্যাংকে যত বেশি লোককে জড়িত করতে পরি, ততই আর্থিক কর্মকাণ্ড বেশি শক্তিশালী হবে। আর্থিক কর্মকাণ্ড যত শক্তিশালী হয়, ততই দেশের উন্নয়ন হয়।’

মুহিত বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে আরো সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ বিষয়ে “আপনার গ্রাহককে জানুন” (নো ইওর কাস্টমার) যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।’

bhorersanglap