বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিলখানা হত্যা মামলায় ১৩৯ জনের ফাঁসি বহাল

ভোরের সংলাপ ডট কম :
নভেম্বর ২৭, ২০১৭
news-image

রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে সেনা সদস্য হত্যাকাণ্ডের মামলায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। একজন মারা গেছেন। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলীসহ ১২ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দুজন মারা গেছেন।

সোমবার বিকেলে বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

বিচারিক আদালতে ৩ থেকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫৬ আসামির মধ্যে ১২৮ আসামিকে ১০ বছর, আটজনকে সাত বছর, চারজনকে ৩ বছর এবং দুজনকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৯ জন খালাস পেয়েছেন। ২৮ জন আপিল করেনি। তিনজন মারা গেছেন।

এদিকে বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের মধ্যে ৩১ জনকে যাবজ্জীন এবং চারজনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৩৪ জনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

দুই দিন ধরে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীগণ, বিজিবির (সাবেক বিডিআর) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আদালত চত্বরে আসামিদের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৩ এপ্রিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ আসামির ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

২০১৫ সালে এ মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়।

এই বেঞ্চে ৩৭০ কার্যদিবস আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ বিভিন্ন আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিডিআরের প্রাক্তন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় প্রাক্তন সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়।

রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। রায়ের পর বিভিন্ন সময়ে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ উদ্যোগ নেন। বিশেষ ব্যবস্থায় এই মামলার পেপারবুক তৈরি করা হয়।

bhorersanglap

আরও পড়তে পারেন