শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘উন্নত দেশ হতে হলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে’

ভোরের সংলাপ ডট কম :
আগস্ট ৮, ২০১৭
news-image

২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে কিংবা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যেতে সবার আগে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর তা নিশ্চিত করতে জরুরি-স্বল্প-মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা, জ্বালানিতে বৈচিত্রতা আনয়ন এবং গ্যাসের চাহিদা পূরণে প্রাকৃতিক তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) আমদানির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিশেষজ্ঞারা।

এছাড়া সরকারের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

আজ মঙ্গলবার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সান আয়োজিত ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও ভিশন ২০৪১’ র্শীষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ আলোচকরা এমন মতামত ব্যক্ত করেন।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অর্জন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরীর সভাপত্বিতে ও নির্বাহী সম্পাদক শিয়াবুর রহমান শিহাবের সঞ্চালনায় আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে ডেইলি সানের কনফারেন্স রুমে এ গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা এ সময় সরকারের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান (পিএসএমপি ২০১৬) বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়ে প্রতিবেশী দেশসমূহ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কথাও বলেন।

আলোচকরা বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে জ্বালানি উৎপাদন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। তারা ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থলভাগ এবং সাগরে গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্বারোপ করেন।

জ্বালানির মূল্য যৌক্তিক ও সহনীয় রাখতে জ্বালানি মিশ্রণ বহুমুখী করা, প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহে প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এলএনজি, এলপিজি, কয়লা, স্থল এবং অগভীর-গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান ও অবকাঠামো নির্মাণের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন বক্তারা।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অপরিহার্য উল্লেখ করে তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চাহিদা মেটাতে দক্ষ মানবসম্পদ একটি বড় প্রতিবন্ধকতা এবং তা দূরীকরণের জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

সরকার পাওয়ার প্লান্টকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে উলে­খ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) খনিজসম্পদ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম বলেন, কয়লা আমদানিতে গুরুত দেয়া উচিত।

এছাড়া পিডিবির প্রজেকশনের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল থাকে না বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, সত্যটা প্রকাশ করলে সরকারের পরিকল্পনাটা বাস্তব সম্মত হতো।

এলএনজি আমদানির বিকল্প হিসেবে সরকারকে ভূমি ও সমুদ্রে ব্যাপকভাবে জ্বালানি অনুসন্ধান চালানো পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের মত দেশের জন্য অনেকটা ব্যয় সাশ্রয়ী হবে। নিজেরা আত্মনির্ভরশীল জাতি হতে পারবো।

বৈঠকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এফবিসিসিআিইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী, বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য, রুপান্তরিত প্রকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো: কামরুজ্জামান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবুল কাশেম, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড এর সদস্য মো ফখরুজ্জামান ও পরিচালক কাজী আবসার উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নায়ন বোর্ড (পিডিবি) চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।

bhorersanglap