শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হিন্দু ও মুসলিম নারীদের মধ্যে পার্থক্য

ভোরের সংলাপ ডট কম :
মে ১৪, ২০১৭
news-image

আল্লাহ তা’আলা কুরানের সুরা আল ইমরানের ৬৪ নাম্বার আয়াতে বলেছেন “এসো সেই কথায় যা তোমাদের এবং আমাদের মধ্যে এক”। প্রত্যেক্ টি মুসলমানকে আল্লাহ নির্দেশ করেছেন আহলে কিতাব বা অমুসলিমদের সাথে শুধু মাত্র সাদৃশ্য গুলো নিয়েই আলোচনা করতে। আমরা যখন কারো সাথে অমিল নিয়ে আলোচনা করি তখন আমাদের মধ্যে সবাভাবিক ভাবেই বিরোধ বাধে। অশান্তির সৃস্টি হয় । আর আল্লাহ পাক কুরানের অনেক জায়গায় বলেছেন তিনি অশান্তি পছন্দ করেন না। আর সে কারনেই আল্লাহ আমাদের উপর এ রকম নির্দেশ জারি করেছেন।

 

 

 

বাইরে থেকে দেখলে হিন্দু ধর্ম ও ইসলামের মধ্যে কোনো রকম সাদৃশ্য খুজে পাওয়া যাবে না। কারন আমরা একজন হিন্দুর চাল-চলন কেই হিন্দু ধর্ম এবং একজন মুসলমানের আচার-ব্যবহার কেই ইসলাম ধর্ম মনে করি। কিন্তু আমি এই প্রবন্ধে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সাদৃশ্য আলোচনা করব না। আমি এখানে আলোচনা করব হিন্দু ধর্ম ও ইসলাম ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গুলোর উপর ভিত্তি করে।

 

 

 

ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর বা আল্লাহর সব চেয়ে ভালো যে সংজ্ঞা হতে পারে সেটা সুরা ইখলাস। এই সুরাই বলা হয়েছে, ” বলো, আল্লাহ এক। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে স্বতন্ত্র। তিনি না জনক না তিনি জাতক এবং না তাঁর সমকক্ষ কেউ আছে।” এই চারটি বাক্যের সাহায্যে আমরা ইসলাম ধর্মে আল্লাহ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারনা করে নিতে পারি।

 

 

 

 

এবার আসুন আমরা হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর সম্পর্কে জানি। যদি কোনো সাধারন হিন্দুকে প্রশ্ন করি আপনি ক-জন ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন? কেউ হইতো বলবে ১০ জন, কেউ ৫০ জন, কেউ ১০০০ জনআবার কেউ হয়তো বলবেন ৩৩ কোটি জন। কিন্তু আমরা যদি কোনো জ্ঞানী, পন্ডিত যিনি হিন্দু ধর্মের পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ গুলো যেমন; বেদ, পূরান, পড়েছেন তার কাছে যাই তাহলে তিনি বলবেনহিন্দুদের কেবল মাত্র একজন ঈশ্বরের ইবাদাত করা উচিত।

 

 

 

 

এ সম্পর্কে বেদ বা হিন্দু ধর্মের বহু কিতাব থেকে বহু উদ্ধৃতি মন্দেত্রওয়া যায়। যেমন, চারটি বেদেই এই শ্লোক মন্ত্র আছে। একে বেদের ব্রহ্মসুত্রও বলা হয়ে থাকে-”একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনানাস্তি কিঞ্চান”। অর্থাত ইশ্বর একজন তার মতো কেউ নেই, কেউ নেই সামান্য নেই। আরও আছে ”তিনি একজন তারই উপাসনা করো”(ঋকবেদ ২/৪৫/১৬)। “এক্‌ম এবম অদ্বৈতম ”অর্থাত তিনি একজন তার মত আর দ্বিতীয় কেউ নেই (ঋকবেদ ১/২/৩)। ”একজনই বিশ্বের প্রভূ”(ঋকবেদ ১০/১২১/৩)।

 

 

 

জুয়া খেলা নিষিদ্ধ:
ইসলাম ধর্মে জুয়া হারাম এটা সব মুসলমানই জানে কিন্তু বেশির ভাগ হিন্দুই জানে না যে হিন্দু ধর্মেও জুয়া খেলা হারাম বা নিষিদ্ধ। বেদে আছে “জুয়ারি ব্যক্তির শ্বাস তাকে অভিশাপ দেয়, তার স্ত্রীও তাকে ত্যাগ করে। জুয়ারি কে কেউ কানাকরি ঋন দেয় না”(ঋকবেদ/১০।৩৪।৩)। চিন্তা করুন জুয়ারি ব্যাক্তির শ্বাস তাকে অভিশাপ দেয় । অর্থাৎ সে ২৪ ঘন্টায় অভিশাপ পেতে থাকে। হিন্দু ধর্মে জুয়া খেলা তাহলে কত বড় পাপ, কত জঘন্য অপরাধ । ঈশ্বর আমাদের এ রকম জঘন্য খেলা থেকে বাঁচার ক্ষমতা দিন। আমিন!

মদ পান করা নিষিদ্ধ:
পাশ্চাত্যে একটা সমিক্ষায় দেখা গিয়েছে যারা নিকট আত্মীয়ের সাথে যৌনসংসর্গ করে তাদের বেশীর ভাগই তা নেশা অবস্থায় বা মাতাল অবস্থায় করে । এ ছাড়া যারা HIV তে আক্রান্ত হয় তাড়া তো প্রায় সবাই মদ্য পানকারি । যা খেলে মানুষ তার হোশ হারায় সে খাদ্য কিভাবে ভালো হতে পারে। এ কারনে ইসলামে মদ্যপান কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ।

সাধারন হিন্দুদের মধ্যে যদিও মদ পান করা কে কোনো ঘৃন্য কাজ বলে মনে করা হয় না কিন্তু হিন্দু ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ বেদে মদ্য পান থেকে দূরে থাকার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যেমন ঋকবেদে ১০।৩৪।১৩ শ্লোকে বলা হয়েছে “মদ পান করার পর মদের নেশা পানকারির হৃদয়ে স্থান লাভের জন্য লড়াই শুরু করে”। অর্থাৎ মদ পান করার ফলে মদের নেশা মানুষের মন দখল করে নেয় ফলে সে ভালো-খারাপ, পাপ-পুন্য সব কিছুই ভুলে যায় এবং নোংরা কাজে লিপ্ত হয়। তাই মদের নেশা যাতে মনে স্থান করতে না পারে তার জন্য মদ থেকে দূরে থাকতে হবে।

নারীদের পর্দা বা হিজাব:
মুসলিম ও এবং অমুসলিমদের মধ্যে একটি ভুল ধারনা প্রচলিত আছে যে ইসলাম নারীদের ছোটো করে রাখে, তাদের পর্দায় রাখে। এটা আসলে তারা তাদের অজ্ঞানতার কারনে বলে থাকে। ইসলাম শুধু নারীদের নয় পুরুষদেরও পর্দার কথা বলে । আর প্রথমে পুরুষদের কথা বলা হয়েছে তার পর নারীদের। যেমন কুরানের ২৪ নম্বার সুরার ৩০ নম্বার আয়াতে পুরুষদের পর্দার কথা বলা হয়েছে। এর পরের আয়াতে অর্থাৎ ৩১ নম্বার আয়াতে নারীদের পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি পুরুষ এবং নারী উভয়ই শরীর ঢেকে রাখে তাহলে সমাজ থেকে ধর্ষন, ব্যভিচার, অবৈধ সম্পর্ক অনেক কমে যাবে। সৌদি আরব ধর্ষন, ব্যভিচা্র বা অনান্য নোংরামীতে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে। এর কারন হল পর্দা এবং ইসলামী শরিয়তের বাস্তবায়ন।

হিন্দু ধর্মেও নারীদের পর্দার কথা বলা হয়েছে। যেমন- যেহেতু ব্রহ্মা তোমাদের নারী করেছেন তাই দৃষ্টিকে অবনত রাখবে, উপরে নয়। নিজেদের পা সামলে রাখো। এমন পোষাক পড়ো যাতে কেউ তোমার দেহ দেখতে না পায় (ঋকবেদ ৮।৩৩।১৯)।

সুত্রঃ ১। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থে আল্লাহ ও মুহাম্মাদ – সুশান্ত নন্দী; ২। হিন্দু ধর্মের গোপন কথা

একটা উদাহারন স্বরুপ গল্প: মুসলিম ছেলেটা বলল চলো দেখাই, একটা দোকানে গিয়ে দোকানদারকে বলল ভাই আমাকে দুটি চকলেট দিন তো, দুটি চকলেট নিল নেওয়ার পরে একটাচকলেটের উপরের পেপার খুলে ফেলল এবং আর একটি ওভাবেই নিয়ে দুটি চকলেট মাটিতে ফেলে দিল এবার ঐ হিন্দু ছেলেটাকে কোন একটা চকলেট তুলতে বলল,

তখন হিন্দু ছেলেটি পেপার মোড়ানো চকলেটটি তুলল, তখন মুসলিম ছেলেটি ঐ হিন্দু ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল, তুমি পেপার লাগানো চকলেটটা কেন তুললে? তখন হিন্দু ছেলেটি বলল ঐচকলেটটা পেপার খুলে ফেলার কারনে ময়লা লেগে তা খাবার অযোগ্য হয়ে গেছে।

তখন মুসলিম ছেলেটি বলছে এই জন্যে আমাদের ধর্মে মহিলাদেরকে দুনিয়ার খারাপ নজর থেকে বাচার জন্য বোরখা পরে। এভাবেই হিন্দু-মুসলিম মহিলাদের মধ্যে পার্থক্য । তথ্য সূত্র-অনলাইন

bhorersanglap